দেড় বছর আগে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শরিফুল গাজী। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখায়। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য জোর করে। আমি বিয়ের কথা বলি। আট মাস আগে কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে বলে আজ থেকে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করি। এরপর থেকে শারিরীক সম্পর্ক শুরু করে।
এ কথা জানান সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের রাব্বুল বৈদ্যের মেয়ে রাহেলা খাতুন।
১৪ বছরের রাহেলা খাতুন বলেন, এক পর্যায়ে গর্ভবর্তী হয়ে পড়লে শরিফুল গাজীকে আমি তার বাড়িতে নেওয়ার কথা জানায়। এরপর আমাকে আজ না কাল করে দিন পার করে দেয়। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে সন্তান নষ্ট হয়নি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিয়ে অস্বীকার করে। বিয়ের কোন কাগজ নেই বলে জানায়। তার পরিবারকে জানালেও তারা আমাকে স্বকৃতি দিতে চায়নি। এখন আমি ফোন করলেও আর রিসিভ করে না শরিফুল। সাত দিন আগে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রেখেছি শরিফা।
রাহেলা খাতুন আরও জানায়, ঘটনাটি নিয়ে থানায় গেলেও থানায় কোন অভিযোগ নেয়নি। বলেছে আদালতে গিয়ে মামলা করতে। গত ২৯ মে আদালতে স্ত্রীর স্বকৃতির দাবিতে মামলা করেছি। তখন সন্তান জন্ম গ্রহন করেনি। আমি অসহায় গরীব পরিবারের মেয়ে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি এরপর আর লেখাপড়া করা হয়নি। কি হবে আমার আমি জানি না। আমি আমার সদ্যজাত সন্তান ও স্ত্রীর স্বকৃতি চাই।
প্রতারক শরিফুল গাজী (৩০) গাবুরা ইউনিয়নের একই গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গাজীর ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, মাস খানেক আগে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে শরিফুল গাজী। স্থানীয়ভাবে কোন সমাধান হয়নি। অসহায় মেয়েটির কোন স্বকৃতি দিতে চাইনি শারিফুল গাজী ও তার পরিবার।
স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম জানান, রাহেলা ও শরিফুলের ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা হচ্ছে। তবে এর কোন সমাধান কেউ করতে পারছে না। অবশেষে আদালতে মামলা করেছে মেয়েটি। পরিবারটিও খুব অসহায়।
গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শরিফুল গাজীর বাবা শহিদুল গাজী ঘের ব্যবসায়ী। টাকাও অনেক। স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় রাহেলাকে নিয়ে থানায় গেলে থানায় কোন অভিযোগই নেয়নি। প্রতারণা করে অসহায় পরিবারের মেয়েটির জীবনটা নষ্ট করেছে। প্রতারক শরিফুল গাজীর স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে শরিফুল গাজীর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শরিফুল গাজীর বাবা ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল গাজী জানান, ঘটনাটি আমাকে আগে কেউ জানায়নি। পরে জোনেছি। তবে ঘটনাটি সত্য বা সঠিক কিনা সেটিও জানা নেই।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিল হোসেন বলেন, রাহেলা খাতুন এসব ঘটনার অভিযোগ নিয়ে থানাতে আসেনি। ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। জেনেছি মেয়েটি স্ত্রীর স্বকৃতির দাবিতে আদালতে মামলা করেছে।
আজকের পত্রিকা